বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় ৮৬ বছর বয়সে সল্টলেকের হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস, শোকস্তব্ধ বাংলার সাংস্কৃতিক মহল
বাংলা রঙ্গমঞ্চের অন্যতম স্তম্ভ, বিশিষ্ট নাট্যকার, পরিচালক ও অভিনেতা মনোজ মিত্র (৮৬) আর নেই। বুধবার (১২ নভেম্বর) সকাল ৮টা ৫০ মিনিটে সল্টলেকের এক বেসরকারি হাসপাতালে চিরবিদায় নেন এই কিংবদন্তি শিল্পী। তাঁর প্রয়াণে বাংলার সাংস্কৃতিক জগতে নেমে এসেছে গভীর শোকের ছায়া।
দীর্ঘ অসুস্থতা ও শেষ মুহূর্ত
পারিবারক সূত্রে জানা গেছে, বয়সজনিত নানা জটিলতায় দীর্ঘদিন ধরেই ভুগছিলেন মনোজ মিত্র। বছরের বেশ কয়েকবার তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিল। সম্প্রতি গুরুতর অসুস্থতার কারণে সল্টলেকের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকদের মতে, অনিয়মিত রক্তচাপই ছিল প্রধান উদ্বেগের কারণ। সর্বাত্মক চেষ্টা সত্ত্বেও তাঁকে বাঁচানো যায়নি।
জীবন ও কর্মযজ্ঞ
১৯৩৮ সালের ২২ ডিসেম্বর বর্তমান বাংলাদেশের সাতক্ষীরার ধূলিহর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন মনোজ মিত্র। পিতার বদলি চাকরির সূত্রে কলকাতায় স্থানান্তরিত হন। স্কটিশ চার্চ কলেজে শিক্ষাজীবন শেষ করে, পরবর্তীতে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের অধ্যক্ষ পদে অধিষ্ঠিত হন।
নাট্যজগতে অবদান
অভিনয় দিয়ে যাত্রা শুরু করলেও, নাট্য রচনায় তিনি অনন্য উচ্চতায় পৌঁছেছিলেন। ১৯৫৯ সালে 'মৃত্যুর চোখে জল' দিয়ে নাট্য রচনার পথ চলা শুরু। তবে ১৯৭২ সালে 'চাক ভাঙা মধু' নাটক তাঁকে এনে দেয় ব্যাপক জনপ্রিয়তা। এই নাটক বাঙালি দর্শকদের হৃদয়ে এক বিশেষ স্থান করে নিয়েছিল।
শোক প্রকাশ
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি গভীর শোক প্রকাশ করে বলেন, "প্রখ্যাত নট, নাট্যকার ও পরিচালক, 'বঙ্গবিভূষণ' মনোজ মিত্র'র প্রয়াণে শোকাহত হলাম। বাংলা থিয়েটার ও চলচ্চিত্র জগতে তাঁর অবদান ছিল অসামান্য।" বিশিষ্ট নাট্যকার বিভাষ চক্রবর্তীসহ সাংস্কৃতিক জগতের অন্যান্য ব্যক্তিত্বরাও শোক জ্ঞাপন করেছেন।
প্রখ্যাত সাহিত্যিক ও প্রয়াত শিল্পীর ভাই অমর মিত্র জানিয়েছেন, পরিবার, বন্ধুবান্ধব ও অনুরাগীদের জন্য এই ক্ষতি অপূরণীয়।
Post a Comment