সাবটাইটেল: মৃত্যুর আগের দিন সালমান শাহর হৃদয়বিদারক প্রয়াস, বন্ধু তুষার খানের সাক্ষাৎকারে উঠে এলো অজানা তথ্য
চলচ্চিত্র জগতের স্বপ্নের নায়ক সালমান শাহর জীবনের শেষ মুহূর্তগুলো নিয়ে নতুন তথ্য প্রকাশ করলেন তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধু, বিশিষ্ট অভিনেতা তুষার খান। সম্প্রতি এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি জানালেন, মৃত্যুর ঠিক আগের দিন সালমান তাঁকে প্রাণপণে খুঁজেছিলেন।
চার দশকেরও বেশি সময় ধরে মঞ্চ ও টেলিভিশন নাটকে অভিনয় করে দর্শকদের মন জয় করা তুষার খান ছিলেন সালমান শাহর অন্যতম বিশ্বস্ত সঙ্গী। 'বিক্ষোভ'সহ একাধিক চলচ্চিত্রে তাঁরা একসাথে কাজ করেছেন, যা তাঁদের বন্ধুত্বকে আরও গভীর করেছিল।
সালমানের মানসিক অবস্থা সম্পর্কে আলোকপাত করে তুষার বললেন, "সালমান যখন মানসিকভাবে বিপর্যস্ত থাকত, তখন প্রায়শই আমার সঙ্গে কথা বলত। আমাকে ফোন করে বলত, 'আমার ভালো লাগছে না। আমি তোমার বাসায় আসব।' তখন আমি সব কাজ ফেলে তার জন্য অপেক্ষা করতাম।"
তুষার আরও জানালেন, এই ধরনের আলাপচারিতার পর সালমান অনেকটা স্বাভাবিক হয়ে যেতেন এবং পরের দিন আবার উৎসাহ নিয়ে অভিনয় সেটে ফিরে যেতেন।
সালমানের মৃত্যুর আগের দিনের ঘটনা স্মরণ করে তুষার বললেন, "সেদিন আমি আমেরিকা থেকে ফিরেছিলাম। বিকেলে আমাদের 'প্রেমপিয়াসী' সিনেমার ডাবিংয়ের কাজ ছিল। কিন্তু আমি এতটাই ক্লান্ত ছিলাম যে, একটি আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়ে অজান্তেই ঘুমিয়ে পড়ি।"
মর্মান্তিক ঘটনার পরের দিন সকালে পরিচালক রেজা হাসমত তুষারকে জানান, "গতকাল ডাবিংয়ের সময় সালমান খুব বিচলিত ছিল। আপনাকে অনেক খুঁজেছে। ফোন করেছে, এমনকি আপনার বাসায় লোক পাঠিয়েছে।"
এই তথ্য জেনে তুষারের মনে গভীর অনুশোচনা জন্ম নেয়। তিনি বলেন, "আমার মনে হয়, ও হয়তো অন্যদিনের মতো আমার কাছে কিছু কথা শেয়ার করতে চেয়েছিল। হয়তো আমার সাথে কথা বলার পর ওর মনটা আবার প্রফুল্ল হয়ে যেত। এমন দুর্ঘটনা হয়তো ঘটত না।"
১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর, মাত্র ২৫ বছর বয়সে সালমান শাহর আকস্মিক মৃত্যু বাংলাদেশের চলচ্চিত্র জগতকে স্তম্ভিত করে দেয়। ঢাকার ইস্কাটনে নিজ বাসায় তাঁর মৃতদেহ পাওয়া যায়। যদিও সরকারি তদন্তে এটিকে আত্মহত্যা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, তবুও তাঁর মৃত্যু নিয়ে অনেক প্রশ্ন এখনো অনুত্তরিত রয়েছে।
তুষার খানের এই স্মৃতিচারণ সালমান শাহর জীবনের শেষ মুহূর্তগুলোর উপর নতুন আলোকপাত করেছে, যা তাঁর অকাল প্রয়াণের রহস্যকে আরও গভীর করে তুলেছে।
Post a Comment