কানাডার বিজ্ঞানীরা সতর্ক করেছেন, দৈনিক তিন-চারটি ডিম খাওয়া হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়
ঢাকা, ১১ সেপ্টেম্বর - পুষ্টিকর খাবার হিসেবে পরিচিত ডিম অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন কানাডার গবেষকরা। তাদের মতে, প্রতিদিন তিন থেকে চারটি ডিম খাওয়ার অভ্যাস সিগারেট খাওয়ার মতোই ক্ষতিকর হতে পারে।
কানাডার ওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির গবেষকরা ১,২০০ নর-নারীর ওপর একটি গবেষণা পরিচালনা করেন। গবেষণায় দেখা গেছে, একটি ডিম একটি সিগারেটের ক্ষতির প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ পর্যন্ত করতে পারে। এর ফলে স্ট্রোক এবং হৃদরোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়।
আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের বিশেষজ্ঞ ডা. গর্ডন থমাসেলি বলেন, "ডিম শরীরের জন্য অনেক প্রয়োজনীয় পুষ্টির উৎস। তবে ডিমের কুসুম শরীরে মাত্রাতিরিক্ত কোলেস্টেরলের যোগান দেয়। এই কোলেস্টেরল হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।"
গবেষণায় আরও দেখা গেছে, যারা দৈনিক দুইটির অধিক ডিম খান, তাদের মধ্যে এই ঝুঁকি আরও বেশি। ডিমের কুসুমে থাকা ক্ষতিকর উপাদান দ্রুত হৃদরোগের কারণ হতে পারে। এমনকি এটি ফুসফুসের ক্যান্সারের ঝুঁকিও বাড়াতে পারে বলে সতর্ক করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
ডা. থমাসেলি আরও বলেন, "অতিরিক্ত ভিটামিন গ্রহণের কারণে শরীরের স্বাভাবিক পুষ্টি প্রক্রিয়া ব্যাহত হতে পারে। এর ফলে ক্ষুধামন্দা, ডায়রিয়া, মাথাব্যথা, লিভার বৃদ্ধি ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিতে পারে।"
তিনি সতর্ক করে দেন যে, গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত ভিটামিন সেবন করলে গর্ভস্থ শিশুর জন্মগত ত্রুটির ঝুঁকি বাড়ে। একইভাবে, অতিরিক্ত ভিটামিন-সি পেট ব্যথা বা ডায়রিয়া বাড়াতে পারে, আর অতিরিক্ত ভিটামিন-ডি বমি বমি ভাব ও তলপেটে ব্যথার কারণ হতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা জোর দিয়ে বলছেন, ডিমের পুষ্টিগুণ অনস্বীকার্য, কিন্তু এর অতিরিক্ত ব্যবহার থেকে সতর্ক থাকতে হবে। তারা পরামর্শ দিচ্ছেন, সপ্তাহে তিন থেকে চারটি ডিম খাওয়া নিরাপদ, তবে প্রতিদিন তিন-চারটি ডিম খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
এই গবেষণার ফলাফল স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি এবং সুষম খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করা যাচ্ছে। তবে বিষয়টি নিয়ে আরও গভীর গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
Post a Comment