উদ্ভূত পরিস্থিতিতে নয়না চৌধুরি ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নিযুক্ত; বিভিন্ন ফেডারেশনে চলছে পদত্যাগের ধারা
বাংলাদেশ কারাতে ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ক্য শৈ হ্লা পদত্যাগ করেছেন। গত শনিবার রাতে অনুষ্ঠিত এক সভায় তাঁর পদত্যাগপত্র গৃহীত হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ফেডারেশনের যুগ্ম সম্পাদক নয়না চৌধুরিকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
পদত্যাগের কারণ ও প্রক্রিয়া
ক্য শৈ হ্লা কয়েকদিন আগে ফেডারেশনের সভাপতি ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাবেক কমিশনার মোজাম্মেল হক খানের কাছে পদত্যাগপত্র প্রেরণ করেন। চিঠিতে তিনি ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কারণ উল্লেখ করেছেন।
নয়না চৌধুরি জানিয়েছেন, "জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে আজ ফেডারেশন থেকে এই সংক্রান্ত চিঠি প্রদান করা হবে।"
রাজনৈতিক প্রভাব
৫ আগস্টের পর থেকে দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে যেমন পালাবদল ঘটছে, ক্রীড়াঙ্গনেও তার প্রভাব পড়েছে। বিভিন্ন ফেডারেশনের গুরুত্বপূর্ণ পদে যারা ছিলেন, তাদের অধিকাংশই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন।
ক্য শৈ হ্লা বান্দরবান জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন এবং তিন পার্বত্য জেলার চেয়ারম্যান হিসেবে অনানুষ্ঠানিকভাবে উপমন্ত্রীর মর্যাদা পেয়েছিলেন। বর্তমান পরিস্থিতিতে তিনি স্বেচ্ছায় ফেডারেশন থেকে সরে গেছেন।
ক্য শৈ হ্লার অবদান
ক্য শৈ হ্লা একজন সাবেক কারাতেকা হিসেবে ফেডারেশনের জন্য অত্যন্ত আন্তরিক ও সক্রিয় ছিলেন। তিনি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মধ্যে প্রথম ব্যক্তি যিনি কোনো ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন। তাঁর মেয়াদে ২০১৯ সালের এসএ গেমসে কারাতের তিনটি স্বর্ণপদক অর্জন করে বাংলাদেশ।
ক্রীড়াঙ্গনে পদত্যাগের ধারা
৫ আগস্টের পর থেকে বিভিন্ন ক্রীড়া ফেডারেশনে পদত্যাগের ঘটনা ঘটছে:
১. বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী
২. অ্যাথলেটিক্স ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রকিব মন্টু ও যুগ্ম সম্পাদক শরাফত আলী
৩. বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালক নাইমুর রহমান দুর্জয়
৪. কারাতে ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ক্য শৈ হ্লা
এছাড়া, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ কাবাডি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সাবেক ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমানকে অপসারণ করেছে।
ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা
আগামী দিনগুলোতে আরও অনেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করতে পারেন বা জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ কর্তৃক অপসারিত হতে পারেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। অন্যদিকে, কিছু ব্যক্তি তাদের পদে থাকার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করছেন বলে ক্রীড়াঙ্গনে গুঞ্জন রয়েছে।
বিশেষভাবে ভলিবল ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান মিকু এবং হ্যান্ডবল ফেডারেশনের দীর্ঘ তিন দশকের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান কোহিনূরের নাম উল্লেখ করা হচ্ছে, যারা তাদের পদে টিকে থাকার চেষ্টা করছেন বলে জানা গেছে।
Post a Comment