হিমোগ্লোবিন স্বল্পতা: লক্ষণ, কারণ ও প্রতিরোধের উপায়

 রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমে গেলে কী হয়? জানুন এর লক্ষণ, কারণ ও প্রতিকারের উপায়



সাবটাইটেল: রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমে গেলে কী হয়? জানুন এর লক্ষণ, কারণ ও প্রতিকারের উপায়


কলকাতা: রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমে যাওয়া একটি গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা, যা অনেক সময় মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। চিকিৎসা বিজ্ঞানে এই অবস্থাকে রক্ত স্বল্পতা বা অ্যানিমিয়া বলা হয়। আসুন জেনে নেওয়া যাক এই সমস্যার বিস্তারিত তথ্য ও প্রতিকারের উপায়।


হিমোগ্লোবিন কী?


চিকিৎসক ডঃ সুদীপ্ত চক্রবর্তী বলছেন, "হিমোগ্লোবিন হল লাল রক্ত কণিকায় থাকা একটি প্রোটিন, যা শরীরের কোষ ও টিস্যুতে অক্সিজেন বহন করে। এর স্বাভাবিক মাত্রা পুরুষদের ক্ষেত্রে ১৩.৮ থেকে ১৭.২ গ্রাম/ডেসিলিটার এবং মহিলাদের ক্ষেত্রে ১২.১ থেকে ১৫.১ গ্রাম/ডেসিলিটার।"


হিমোগ্লোবিন স্বল্পতার লক্ষণ


রক্তবিশেষজ্ঞ ডঃ অনির্বাণ মুখোপাধ্যায় জানাচ্ছেন, "হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমে গেলে নিম্নলিখিত লক্ষণগুলি দেখা দিতে পারে:


১. অত্যধিক ক্লান্তি ও দুর্বলতা

২. মাথা ঘোরা ও বুক ধড়ফড়ানি

৩. ত্বক ও নখের রং ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়া

৪. শ্বাসকষ্ট ও হাঁটতে কষ্ট

৫. চুল পড়া বেড়ে যাওয়া

৬. পায়ের পাতা ফোলা"


প্রধান কারণসমূহ


পুষ্টিবিদ শ্রীমতি মীরা সেনগুপ্ত বলছেন, "হিমোগ্লোবিন স্বল্পতার প্রধান কারণগুলি হল:


১. অত্যধিক রক্তপাত (আঘাত বা মাসিকের কারণে)

২. ঘন ঘন রক্তদান

৩. প্লীহা বৃদ্ধি

৪. থ্যালাসেমিয়া

৫. ভিটামিন বি১২ এর অভাব

৬. হাড়ের মজ্জার সমস্যা

৭. কিডনির রোগ

৮. খাদ্যে আয়রন ও ফোলেটের অভাব"


নির্ণয় ও চিকিৎসা


ডঃ চক্রবর্তী জানাচ্ছেন, "সাধারণ রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমেই হিমোগ্লোবিনের মাত্রা নির্ণয় করা যায়। চিকিৎসা পদ্ধতি নির্ভর করে মূল কারণের উপর। সাধারণত খাদ্য সম্পূরক, আয়রন ট্যাবলেট বা কিছু ক্ষেত্রে রক্ত পরিব্যাপ্তির প্রয়োজন হতে পারে।"


প্রতিরোধের উপায়


পুষ্টিবিদ সেনগুপ্ত পরামর্শ দিচ্ছেন, "হিমোগ্লোবিন স্বল্পতা প্রতিরোধে:


১. লৌহসমৃদ্ধ খাবার যেমন মুরগির মেটে, ডিম, আপেল, বেদানা খান

২. ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করুন

৩. নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করান

৪. চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সম্পূরক গ্রহণ করুন"


বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হিমোগ্লোবিন স্বল্পতার লক্ষণ দেখা দিলে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। সঠिক খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাপন পদ্ধতি অবলম্বন করে এই সমস্যা থেকে নিজেকে রক্ষা করা সম্ভব।

Post a Comment