ডায়াবেটিসের ঝুঁকি সম্পর্কে যেসব জানা জরুরি, জানতে পড়ুন

প্রতি সাত সেকেন্ডে একজন আক্রান্ত; জেনে নিন ঝুঁকি, লক্ষণ ও প্রতিরোধের উপায়



ডায়াবেটিস বর্তমানে বিশ্বের অন্যতম প্রধান স্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিস ফেডারেশনের (আইডিএফ) ২০২১ সালের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বে ২০-৭৯ বছর বয়সী প্রায় ৫৩৭ মিলিয়ন মানুষ এই রোগে আক্রান্ত। প্রতি সাত সেকেন্ডে একজন মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হচ্ছেন, যা উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।


ডায়াবেটিস কী?


ডায়াবেটিস একটি দীর্ঘমেয়াদী মেটাবলিক ডিজঅর্ডার। এই রোগে শরীর পর্যাপ্ত ইনসুলিন উৎপাদন করতে পারে না বা উৎপাদিত ইনসুলিন কার্যকরভাবে ব্যবহার করতে পারে না। ফলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বেড়ে যায়।


ডায়াবেটিসের প্রকারভেদ:


১. টাইপ-১ ডায়াবেটিস: শরীরের সমস্ত ইনসুলিন উৎপাদন ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়।

২. টাইপ-২ ডায়াবেটিস: শরীরে ইনসুলিন থাকে কিন্তু তা কার্যকর হয় না।

৩. জেস্টেশনাল ডায়াবেটিস: গর্ভাবস্থায় দেখা দেয়।

৪. অন্যান্য প্রকার


ঝুঁকিপূর্ণ গোষ্ঠী:


• মধ্যবয়স্ক ও বৃদ্ধ ব্যক্তিরা

• অতিরিক্ত ওজনযুক্ত ব্যক্তিরা

• কম শারীরিক পরিশ্রমযুক্ত জীবনযাপনকারী

• দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভূত ব্যক্তিরা

• গর্ভবতী নারী (৬-১৬% আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা)

• জাঙ্কফুড প্রিয় ব্যক্তিরা

• জিনগত কারণে ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিরা

• অতিরিক্ত মানসিক চাপগ্রস্ত ব্যক্তিরা

• ধূমপায়ীরা

• অনিয়ন্ত্রিত মিষ্টি ও কোমল পানীয় সেবনকারীরা


প্রধান লক্ষণসমূহ:


• ঘন ঘন ক্ষুধা ও তৃষ্ণা অনুভব

• ঘন ঘন মূত্রত্যাগ

• অস্বাভাবিক ওজন হ্রাস

• ক্লান্তি ও দুর্বলতা

• দৃষ্টিশক্তি হ্রাস

• ত্বকের সমস্যা (শুষ্কতা, ফাটল, সংক্রমণ)


প্রতিরোধের উপায়:


১. নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম

২. স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলা

৩. ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা

৪. মানসিক চাপ কমানো

৫. ধূমপান ত্যাগ করা

৬. নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো


ডায়াবেটিস একটি গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা, যা হৃদরোগ, স্ট্রোক, দৃষ্টিহীনতা, কিডনি সমস্যাসহ নানা জটিলতার কারণ হতে পারে। তবে সচেতনতা, নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং জীবনশৈলী পরিবর্তনের মাধ্যমে এই রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন শুধু ডায়াবেটিস নয়, অন্যান্য অনেক রোগ প্রতিরোধেও সহায়ক।

Post a Comment