কাজী সালাউদ্দিনের চতুর্থ মেয়াদ প্রত্যাশা: ফিফার তিন মেয়াদ নীতির সঙ্গে দ্বন্দ্ব
প্রতিবেদন:
বিশ্ব ফুটবলের শীর্ষ সংস্থা ফিফার নীতিমালা অনুযায়ী কোনো পদে তিন মেয়াদের বেশি দায়িত্ব পালনের সুযোগ নেই। কিন্তু বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) এই নীতির বাইরে গিয়ে নিজস্ব পথে চলছে। বর্তমান সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন ইতোমধ্যে চার মেয়াদ পূরণ করেছেন এবং পঞ্চম মেয়াদের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
ফিফার গঠনতন্ত্রের ৩২ ধারায় স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে যে, সভাপতি ও কাউন্সিল সদস্যরা সর্বোচ্চ তিন মেয়াদ দায়িত্ব পালন করতে পারবেন। এই নিয়ম ২০১৬ সালে সংযোজন করা হয়েছিল, যখন ফিফা তার সংগঠনে ব্যাপক সংস্কার আনে।
কিন্তু বাফুফের ক্ষেত্রে এই নিয়ম প্রযোজ্য হচ্ছে না। কাজী সালাউদ্দিন ২০০৮ সাল থেকে বাফুফের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এর মধ্যে তিনি চার মেয়াদ পূরণ করেছেন এবং পঞ্চম মেয়াদের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। শুধু সালাউদ্দিন নন, বাফুফের অন্যান্য পদাধিকারীরাও একাধিক মেয়াদ ধরে দায়িত্ব পালন করছেন।
বাফুফের বর্তমান গঠনতন্ত্র ২০০৮ সালে প্রণীত হয়েছিল, যা মূলত এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনের আদলে তৈরি। এতে নির্বাচনের সময় প্রার্থীর সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৭২ বছর নির্ধারণ করা হয়েছে, যা এএফসির নিয়মের চেয়ে দুই বছর বেশি।
সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনের বয়স নিয়েও বিতর্ক রয়েছে। অফিসিয়াল রেকর্ডে তাঁর জন্ম ১৯৫৪ সালে দেখানো হলেও, অনেকের ধারণা তাঁর প্রকৃত বয়স আরও বেশি। তবে এই দাবির পক্ষে কোনো প্রমাণ নেই।
বাফুফে কর্মকর্তারা প্রায়শই ক্লাব ও অধীনস্থ সংস্থাগুলোকে ফিফার নিয়ম মেনে চলার নির্দেশ দেন। কিন্তু নিজেদের ক্ষেত্রে তারা ফিফার মেয়াদ সীমার নিয়ম অনুসরণ করছেন না। এই দ্বৈত নীতি নিয়ে ফুটবল মহলে প্রশ্ন উঠছে।
বাংলাদেশের ফুটবল পরিচালনায় স্বচ্ছতা ও গণতান্ত্রিক চর্চা নিশ্চিত করতে হলে, বাফুফেকে ফিফার নিয়ম অনুসরণ করে নিজেদের গঠনতন্ত্র সংশোধন করতে হবে। এতে করে নতুন নেতৃত্বের উত্থান ঘটবে এবং দেশের ফুটবলের উন্নয়নে নতুন ধারার সূচনা হতে পারে।
Post a Comment