১ ঘণ্টা জড়িয়ে ধরে ইনকাম ৭ হাজার টাকা

যুক্তরাজ্যের ব্রিস্টলে ১ ঘণ্টার আলিঙ্গনের বিনিময়ে ৭ হাজার টাকা আয়



আধুনিক জীবনযাত্রায় মানুষের মধ্যে বেড়ে চলা নিঃসঙ্গতা ও মানসিক চাপের প্রেক্ষাপটে একটি অভিনব পেশা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে 'কাডল থেরাপি'। যুক্তরাজ্যের ব্রিস্টল শহরে ট্রেভর হুটন নামের এক তরুণ এই নতুন ধরনের সেবা প্রদান করে থাকেন, যেখানে তিনি গ্রাহকদের এক ঘণ্টা জড়িয়ে ধরে থাকেন।


পেশা হিসেবে আলিঙ্গন

ট্রেভর হুটন তার এই অসাধারণ পেশার নাম দিয়েছেন 'কাডল থেরাপি'। তিনি এক ঘণ্টা জড়িয়ে ধরার বিনিময়ে ৭৫ ইউরো (প্রায় ৭ হাজার বাংলাদেশি টাকা) নিয়ে থাকেন। তবে তিনি জোর দিয়ে বলেন, এটি কেবল সাধারণ আলিঙ্গন নয়, বরং এর সাথে যুক্ত হয় বিশেষ যত্ন, আদর এবং শুভকামনা।


থেরাপির প্রক্রিয়া

ট্রেভর জানান, প্রতিটি গ্রাহকের জন্য থেরাপির ধরন ভিন্ন হয়। তিনি বলেন, "যদি আপনার হাতে এক ঘণ্টা অবসর থাকে, সেই সময়ে আদর ও ভালোবাসা পেলে কেমন লাগবে?" প্রথমে অনেকেই বিব্রত বোধ করলেও, সময়ের সাথে সাথে তারা স্বস্তি অনুভব করতে থাকেন।


পেশার উৎপত্তি

দশ বছর আগে মানবিক সম্পর্কের ওপর একটি বৈজ্ঞানিক গবেষণা ট্রেভরের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। এরপর চলতি বছরের মে মাসে তিনি এই অভিনব পেশায় যোগ দেন। তবে তিনি স্পষ্ট করে বলেন, এই সেবার সাথে যৌনতার কোনো সম্পর্ক নেই।


সেবার নীতিমালা

ট্রেভর বলেন, "এখানে কোনো যৌনতা নেই, সবকিছুই সম্পূর্ণ প্ল্যাটোনিক এবং গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী পরিচালিত হয়।" তিনি আরও জানান, প্রথমে তিনি গ্রাহকের সাথে সাক্ষাৎ করেন, তারপর নীতিমালা নিয়ে আলোচনা করেন। উভয় পক্ষের সম্মতিতে একটি সেশন নির্ধারণ করা হয়, যেখানে গ্রাহকের অনুভূতি ও চাহিদা বিশ্লেষণ করে তার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত পদ্ধতি নির্বাচন করা হয়।


পেশা বেছে নেওয়ার কারণ

ট্রেভর হুটন বলেন, "আমি মানুষের মধ্যে বন্ধন বাড়াতে এই ব্যবসা শুরু করেছি। অনেক মানুষ যারা আদর-ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত, তাদের জন্যই আমি এই পেশায় এসেছি। এটি শুধু আলিঙ্গন নয়, এটি মানুষকে সেই জিনিসটি দেয় যা তার প্রয়োজন।"


সামাজিক প্রতিক্রিয়া

যদিও এই ধরনের পেশা অনেকের কাছে অস্বাভাবিক মনে হতে পারে, কিন্তু এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক প্রয়োজন পূরণ করছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। আধুনিক সমাজে বেড়ে চলা একাকিত্ব ও মানসিক চাপের মোকাবেলায় এই ধরনের থেরাপি সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে।


'কাডল থেরাপি'র মতো নতুন ধরনের পেশার আবির্ভাব প্রমাণ করে যে, আমাদের সমাজে মানবিক স্পর্শ ও সान্নিধ্যের প্রয়োজনীয়তা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ambambola। এই ধরনের সেবা যদিও বিতর্কিত হতে পারে, তবে এটি আমাদের সমাজের একটি গুরুত্বপূর্ণ চাহিদা পূরণ করছে বলে মনে করেন সমাজবিজ্ঞানীরা। ভবিষ্যতে এই ধরনের পেশা আরও বিকশিত হবে কিনা, তা দেখার অপেক্ষায় রইল।

Post a Comment