রাতের তৃষ্ণা: কারণ ও প্রতিকার জানুন বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে

মাঝরাতে ঘন ঘন তৃষ্ণায় জাগছেন? জেনে নিন এর মূল কারণ ও সমাধানের উপায়



মাঝরাতে হঠাৎ তৃষ্ণায় জেগে ওঠা অনেকেরই সাধারণ সমস্যা। চিকিৎসা বিজ্ঞানে এই অবস্থাকে 'পলিডিপসিয়া' নামে অভিহিত করা হয়। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এর পিছনে বিভিন্ন শারীরিক ও পরিবেশগত কারণ থাকতে পারে। আসুন জেনে নেই রাতের অস্বাভাবিক তৃষ্ণার কারণ ও তা থেকে মুক্তির উপায়:


১. খাদ্যাভ্যাসের প্রভাব:

পুষ্টিবিদরা জানিয়েছেন, আমাদের দৈনন্দিন খাদ্যাভ্যাস তৃষ্ণার মাত্রাকে প্রভাবিত করে। রাতের খাবারে অতিরিক্ত লবণ বা মসলাযুক্ত খাবার গ্রহণ করলে তা শরীরকে জলশূন্য করে তোলে। এছাড়া ক্যাফেইন এবং মদ্যপান ডিহাইড্রেশনের অন্যতম কারণ।


২. ওষুধের পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া:

আমেরিকান জেরিয়াট্রিক্স সোসাইটির ২০১৭ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, কিছু নির্দিষ্ট ওষুধ, বিশেষ করে বিষণ্নতা ও উদ্বেগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধ, মুখ শুষ্কতা ও ঘন ঘন প্রস্রাবের প্রবণতা বাড়াতে পারে।


৩. স্লিপ অ্যাপনিয়া:

স্লিপ ফাউন্ডেশনের মতে, স্লিপ অ্যাপনিয়া রোগীদের মধ্যে মুখ দিয়ে শ্বাস নেওয়ার প্রবণতা বেশি থাকে, যা মুখ শুষ্কতা ও তৃষ্ণার কারণ হতে পারে।


৪. অন্যান্য স্বাস্থ্যগত কারণ:

ডায়াবেটিস, কিডনি সমস্যা, বা হরমোনের ভারসাম্যহীনতাও রাতের তৃষ্ণার কারণ হতে পারে।


রাতের তৃষ্ণা নিয়ন্ত্রণের উপায়:


১. খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন:

   - রাতের খাবারে লবণ ও মসলার পরিমাণ কমান

   - ঘুমের আগে ক্যাফেইন ও অ্যালকোহল গ্রহণ এড়িয়ে চলুন

   

২. জীবনযাপনের ধরন পরিবর্তন:

   - ঘুমানোর আগে দীর্ঘ সময় স্ক্রিনের সামনে কাটানো এড়ান

   - নিয়মিত ঘুমের সময়সূচী মেনে চলুন

   - শান্ত ও আরামদায়ক শয়নকক্ষ নিশ্চিত করুন


৩. মানসিক স্বাস্থ্য:

   - মানসিক চাপ কমানোর কৌশল অনুশীলন করুন

   - প্রয়োজনে পেশাদার সাহায্য নিন


৪. চিকিৎসকের পরামর্শ:

   - যদি সমস্যা দীর্ঘস্থায়ী হয়, অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন

   - ওষুধের পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে জানুন


রাতের অস্বাভাবিক তৃষ্ণা হয়তো প্রথমে গুরুত্বহীন মনে হতে পারে, কিন্তু এটি অনেক ক্ষেত্রে গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যার লক্ষণ হতে পারে। জীবনযাপনের ধরন পরিবর্তন ও সঠিক চিকিৎসা পদ্ধতি অবলম্বন করে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। তবে লক্ষণ দীর্ঘস্থায়ী হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন ও সচেতনতার মাধ্যমে আপনি নিশ্চিত করতে পারেন একটি নিরবচ্ছিন্ন ও আরামদায়ক রাতের ঘুম।

Post a Comment