গবেষণায় উঠে এলো অতিরিক্ত ব্যয়বহুল বিয়ের নেতিবাচক প্রভাব
বিবাহ মানুষের জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। তবে এই অনুষ্ঠানের জাঁকজমক ও ব্যয়বহুলতা নিয়ে সম্প্রতি প্রশ্ন তুলেছেন গবেষকরা। এমরি বিশ্ববিদ্যালয় ও সিঙ্গাপুর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক চাঞ্চল্যকর এক তথ্য উপস্থাপন করেছেন - কম খরচের বিয়েই নাকি দীর্ঘস্থায়ী হয়।
গবেষকদের মতে, যে দম্পতিরা বিয়েতে অপেক্ষাকৃত কম ব্যয় করেন, তাদের দাম্পত্য জীবন অধিক স্থায়ী হওয়ার প্রবণতা দেখা যায়। 'অর্থ, বিবাহ ও যোগাযোগ' শীর্ষক এই গবেষণায় দেখা গেছে, অতিরিক্ত ব্যয়বহুল বিয়ে অনেক ক্ষেত্রেই দম্পতির জীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
বিয়ের অতিরিক্ত খরচ মেটাতে অনেকেই ঋণের আশ্রয় নেন। এই ঋণ পরিশোধের চাপ পরবর্তীতে নবদম্পতির সংসারে অশান্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। নতুন জীবন শুরুর প্রাথমিক পর্যায়েই আর্থিক চাপের কারণে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিরোধ দেখা দিতে পারে, যা কখনو কখনو বিচ্ছেদের পর্যায় পর্যন্ত গড়িয়ে যায়।
অন্যদিকে, অল্প ব্যয়ে বিয়ে সম্পন্ন করলে দম্পতি ঋণের বোঝা এড়াতে পারেন। এতে তাদের নতুন জীবন শুরু হয় স্বাচ্ছন্দ্যে, যা দীর্ঘমেয়াদে সুখী দাম্পত্য জীবনের ভিত্তি রচনা করে।
একটি সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারী ৬৩ শতাংশ ব্যক্তি মনে করেন, বিয়েতে অতিরিক্ত ব্যয় করার চেয়ে সেই অর্থ হানিমুনে ব্যয় করা অধিক ফলপ্রসূ। তাদের মতে, পছন্দের স্থানে একসঙ্গে সময় কাটানো দম্পতির মধ্যে বোঝাপড়া ও ভালোবাসা আরও গভীর করে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, বিয়ের অনুষ্ঠান নয়, বরং দুজনের মধ্যকার সম্পর্কের গুণগত মান বজায় রাখাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তাই বিয়ের ব্যয় নির্ধারণের সময় দম্পতির উচিত তাদের আর্থিক সামর্থ্য ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা বিবেচনা করা।
পরিশেষে বলা যায়, বিয়ে অবশ্যই জীবনের একটি স্মরণীয় মুহূর্ত। কিন্তু এই মুহূর্তের জন্য ভবিষ্যতের সুখ বিসর্জন দেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ নয়। সুতরাং, একটি সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য বিয়ের ব্যয় সীমিত রাখাই শ্রেয়।
Post a Comment