চিত্রজগতের তারকাসহ রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ আসামির কাঠগড়ায়
খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে হামলা: রাজনীতি ও চলচ্চিত্র জগতের প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে মামলা
ঢাকা, ২৫ আগস্ট - গণতান্ত্রিক রাজনীতির অঙ্গনে এক চাঞ্চল্যকর ঘটনার পরিণতিতে আজ রাজধানীর এক আদালতে দায়ের করা হলো একটি গুরুত্বপূর্ণ মামলা। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে হামলা ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে চিত্রনায়ক জায়েদ খান, অভিনেতা শাহরিয়ার নাজিম জয়সহ রাজনীতি ও সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রের ৫০ জন প্রভাবশালী ব্যক্তিকে আসামি করে এই মামলা দায়ের করা হয়েছে।
২০১৫ সালের ২০ এপ্রিল, নির্বাচনি প্রচারণার মধ্যবর্তী সময়ে, বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সম্মুখে আয়োজিত একটি পথসভায় যোগদানের পথে খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে এই হামলা সংঘটিত হয়। মামলার অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে যে, আসামিরা সশস্ত্র অবস্থায় হামলা চালিয়ে খালেদা জিয়াকে হত্যার চেষ্টা করেন। এই ঘটনায় তাঁর গাড়িবহরের ১২ থেকে ১৪টি গাড়ি ভাঙচুর করা হয় এবং ৪টি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করা হয়। এছাড়াও দলীয় নেতাকর্মীদের উপর শারীরিক নির্যাতন চালানো হয় বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
আইনি প্রক্রিয়া
আজ রোববার ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জাকী আল ফারাবীর আদালতে মো. শাহরিয়ার ইমাম আসিপ বাদী হয়ে এই মামলাটি দায়ের করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে অভিযোগটি মতিঝিল থানা পুলিশকে এজাহার হিসেবে গ্রহণ করার নির্দেশ দিয়েছেন। মামলার এজাহারে আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদনও করা হয়েছে।
উল্লেখযোগ্য আসামিদের তালিকা
মামলায় অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন:
• শেখ সেলিম ও শেখ হেলাল - প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা
• কর্নেল (অব.) ফারুক খান - সাবেক সেনা কর্মকর্তা
• জায়েদ খান ও শাহরিয়ার নাজিম জয় - জনপ্রিয় চলচ্চিত্র অভিনেতা
• কাজী সালাউদ্দিন - বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি
• শাবান মাহমুদ - বিশিষ্ট সাংবাদিক
এছাড়াও তালিকায় রয়েছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কয়েকজন কর্মকর্তা।
সামাজিক প্রতিক্রিয়া
এই মামলা দায়েরের খবর প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক মহলে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে। বিরোধী দলের নেতারা এই মামলাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে অভিহিত করেছেন। অন্যদিকে, সরকার দলীয় নেতারা বলছেন, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য এই ধরনের পদক্ষেপ অপরিহার্য।
এই মামলার ফলাফল যাই হোক না কেন, এটি নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় হিসেবে চিহ্নিত হবে। আগামী দিনগুলোতে এই মামলার অগ্রগতি সারা দেশের মানুষ উৎকণ্ঠার সাথে লক্ষ্য করবে, যা দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার উপর ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে।
Post a Comment