ইন্টারনেট বিচ্ছিন্নতা: শিশুদের ডিজিটাল আসক্তি থেকে মুক্তির সুবর্ণ সুযোগ

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সময়টি কাজে লাগিয়ে শিশুদের বাস্তব জীবনের সাথে সংযোগ স্থাপন করুন



আধুনিক যুগে শৈশবের সংজ্ঞা পাল্টে গেছে। একসময়কার বিকেলের উন্মুক্ত আকাশের নীচে খেলাধুলার পরিবর্তে, আজকের শিশুরা ঘরের চার দেয়ালের মধ্যে আবদ্ধ থাকতে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছে। তাদের জীবনে ইন্টারনেট, গেমস এবং সোশ্যাল মিডিয়ার প্রভাব ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।


পরিসংখ্যান দেখাচ্ছে, অধিকাংশ শিশুর অবসর সময় এখন স্মার্টফোনের সামনে কাটছে। অভিভাবকরাও শিশুদের শান্ত রাখতে বা খাওয়ানোর সময় ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করছেন। কিন্তু সম্প্রতি দেশব্যাপী ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্নতা এই অভ্যাসে পরিবর্তন আনতে বাধ্য করেছে।


শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. ফারহানা ফ্লোরা এই পরিস্থিতিকে একটি সুযোগ হিসেবে দেখছেন। তিনি বলেন, "এই সময়টা শিশুদের বাস্তব জীবনের সাথে পুনঃসংযোগ স্থাপনের জন্য আদর্শ। আমরা শিশুদের ডিজিটাল নির্ভরতা কমিয়ে তাদের স্বাভাবিক বিকাশে সহায়তা করতে পারি।"


বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে দিয়েছেন যে, অতিরিক্ত গ্যাজেট ব্যবহারের ফলে শিশুদের স্বাভাবিক বিকাশ ব্যাহত হতে পারে। এর প্রভাবে খাদ্যাভ্যাস, ভাষা শিক্ষা, সামাজিক দক্ষতা এবং মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। এছাড়াও, দীর্ঘ সময় ধরে ডিজিটাল স্ক্রিন দেখার ফলে চোখের স্বাস্থ্যের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।


অভিভাবকদের জন্য পরামর্শ দিতে গিয়ে ডা. ফ্লোরা বলেন, "শিশুদের গ্যাজেট থেকে দূরে রাখতে ধীরে ধীরে অগ্রসর হওয়া উচিত। তাদের সাথে গল্প করা, খেলাধুলা করা এবং বই পড়ে শোনানোর মতো কার্যক্রম বাড়ানো যেতে পারে। এছাড়া, গ্যাজেট ব্যবহারের সময়সীমা নির্ধারণ করে দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।"


শেষ পর্যন্ত, বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বর্তমান পরিস্থিতি শিশুদের ডিজিটাল আসক্তি কমানোর একটি অনন্য সুযোগ। অভিভাবকদের এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে শিশুদের সুস্থ ও স্বাভাবিক বিকাশের পথ সুগম করার আহ্বান জানানো হচ্ছে।

Post a Comment