অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মেয়াদ নির্ভর করবে সংস্কার ও নির্বাচনের সমন্বয়ে: আসিফ নজরুল

প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার ও নির্বাচনের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষার প্রতিশ্রুতি




অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল জানিয়েছেন, সরকারের মেয়াদ নির্ধারিত হবে দেশের সংস্কার প্রয়োজনীয়তা এবং নতুন নির্বাচনের আকাঙ্ক্ষার মধ্যে সমন্বয়ের ভিত্তিতে।


শনিবার সকালে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এই মন্তব্য করেন। আসিফ নজরুল বলেন, "রাজনৈতিক দলগুলোর প্রত্যাশা থাকবে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নির্বাচন, আবার এ দেশের সাধারণ মানুষের যে সংস্কার আকাঙ্ক্ষা, সেখানে প্রত্যাশা থাকবে এ সরকার যেন জরুরি কিছু সংস্কার করে যায়।"


উপদেষ্টা উল্লেখ করেন যে, অতীতে বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান যেমন নির্বাচন কমিশন, পুলিশ, বিচার বিভাগ, দুর্নীতি দমন কমিশন এবং পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে জনগণকে নির্যাতনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করার প্রচেষ্টা ছিল। তিনি বলেন, "এই সমস্ত প্রতিষ্ঠান থেকে কিছু-কিছু ভালো সার্ভিস পেয়েছি। এসব প্রতিষ্ঠানে কিছু-কিছু ভালো মানুষ আছেন। কিন্তু পুরো সিস্টেমকে এমনভাবে দাঁড় করিয়েছিল, ভিন্নমত পোষণকারী মানুষ, মৌলিক অধিকার চর্চাকারী মানুষের জন্য এ প্রতিষ্ঠানগুলো একটা আতঙ্কে পরিণত হয়েছিল।"



আসিফ নজরুল জোর দিয়ে বলেন, "সংস্কারের আকাঙ্ক্ষা এবং নতুন নির্বাচনের আকাঙ্ক্ষার মধ্যে সমন্বয় করে যতদিন থাকা দরকার ততদিনই আমরা থাকবো। বেশিও না, কমও না।"



নিজের ব্যক্তিগত অভিমত প্রকাশ করে তিনি জানান, "ব্যক্তিগতভাবে যদি আমি বলি আমি আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা জীবন মিস করি, আমি আমার উন্মুক্ত ফ্রি জীবন মিস করি।" তবে তিনি এও বলেন, "দায়িত্বের জায়গা থেকে আমাকে এখানে এবং আমাদের অন্যান্য উপদেষ্টাকে যে দায়িত্বের জন্য আমরা এখানে এসেছি সে দায়িত্ব আমরা পালন করার চেষ্টা করব।"



শেষ পর্যন্ত, তিনি নির্বাচন কমিশনের সংস্কারের গুরুত্ব তুলে ধরেন। "নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা তো আপনারা জানেন। এখানে যদি ওভারহোলিং না করা হয়, তাহলে ভবিষ্যতে যে সরকার আসবে তারা তো এই প্রতিষ্ঠানগুলোকে সেভাবে ব্যবহার করবে। আমাদের অতীতের অভিজ্ঞতা সুখবর নয়।"



অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের এই উপদেষ্টার বক্তব্য থেকে স্পষ্ট যে, সরকার প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার এবং নির্বাচনের মধ্যে একটি সুষম ভারসাম্য রক্ষা করতে চায়। এই প্রক্রিয়ায় তারা জনগণের প্রত্যাশা পূরণের পাশাপাশি দেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে কাজ করবে বলে আশা করা যায়।

Post a Comment