তিন উপজেলার দেড় শতাধিক গ্রাম প্লাবিত, জনজীবন বিপর্যস্ত
ফেনী জেলায় গত কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। ফুলগাজী, পরশুরাম ও ছাগলনাইয়া উপজেলার দেড় শতাধিক গ্রাম জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। ফলে দুই লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করতে বাধ্য হচ্ছেন।
বুধবার (২১ আগস্ট) পর্যন্ত মূহুরী, কহুয়া ও সিলোনীয়া নদীর পানি বিপদসীমার ৮৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বন্যার কারণে রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি সবকিছুই জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে তিন উপজেলার বাসিন্দারা চরম দুর্দশায় পড়েছেন।
মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) একজন নিখোঁজের খবর পাওয়া গেলেও বুধবার সকাল পর্যন্ত তার কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। তবে স্থানীয়দের মতে, অনেককেই জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।
গত তিন দিনের ভারী বর্ষণ এবং ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে এই বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। ফেনীর পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. আবুল কাশেম জানিয়েছেন, মুহুরী-কহুয়া-সিলোনীয়া নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ২৭টি ভাঙা অংশ দিয়ে দ্রুত পানি প্রবেশ করছে লোকালয়ে।
গত মাসে নদীর ১৫ স্থানে ভাঙন দেখা দেয়। সেসব স্থানে মেরামতের পর চলতি মাসের শুরুতে বাঁধের আরও ১২ স্থান ভেঙে যায়, যার ফলে ১০০টির বেশি গ্রাম প্লাবিত হয়। অবকাঠামো, ধান, ফসল ও মাছের ক্ষতি ৩০ কোটি টাকার বেশি হয়েছে বলে জানা গেছে।
পরশুরাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আফরোজা হাবিব শাপলা জানিয়েছেন, দুর্যোগ মোকাবিলায় ৫০০ প্যাকেট শুকনো খাবার ও ৫০ টন চাল মজুত রাখা হয়েছে।
ফুলগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানিয়া ভূঁইয়া বলেছেন, উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের ৪০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে এবং কয়েক হাজার পরিবার পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে।
বন্যা দুর্গতদের সহায়তায় স্থানীয় প্রশাসন ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন মাঠে নেমেছে। সেনাবাহিনী, বিজিবি, কোস্টগার্ড, এবং ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা উদ্ধার অভিযান ও সহায়তা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।
Post a Comment