মাথার একপাশে ব্যথা: কারণ, লক্ষণ ও করণীয়

সাধারণ মনে হলেও হতে পারে গুরুতর রোগের লক্ষণ; জেনে নিন কখন চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন



মাথার একপাশে ব্যথা অনেকেই প্রায়শই অনুভব করেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এটি সাময়িক ও সাধারণ সমস্যা হলেও, কখনও কখনও এটি গুরুতর রোগের লক্ষণ হতে পারে। চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা এই ধরনের ব্যথার বিভিন্ন কারণ ও লক্ষণ সম্পর্কে সতর্ক করেছেন।


প্রধান কারণসমূহ:


১. ট্রাইজেমিনাল নিউরালজিয়া:

   - মাথার ত্বকে থাকা 'ট্রাইজেমিনাল' স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হলে এই দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা দেখা দেয়।

   - এই স্নায়ু চেহারার অনুভূতি মস্তিষ্কে পৌঁছায়, যা ব্যাহত হলে ব্যথা অনুভূত হয়।


২. অ্যাকসিপিটাল নিউরালজিয়া:

   - স্নায়বিক কারণে সৃষ্ট এই ব্যথা দপদপানি ধরনের হয়।

   - বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার মতো অনুভূতি বা মাথা ভেদ করার অনুভব হতে পারে।


৩. টেমপোরাল আর্টেরাইটিস:

   - মাথা ও ঘাড়ের স্নায়ু প্রদাহের কারণে মস্তিষ্কে রক্ত সরবরাহ ব্যাহত হয়।

   - মাথার যেকোনো পাশে ব্যথা হতে পারে।

   - পেশি ব্যথা, অবসাদ ও চোয়াল ব্যথাও দেখা দিতে পারে।


৪. ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া:

   - অ্যাসিটামিনোফেন, অ্যাসপিরিন, আইবুপ্রফেন ইত্যাদি ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে মাথাব্যথা হতে পারে।


৫. অন্যান্য কারণ:

   - অ্যালার্জি

   - অবসাদ

   - ক্লান্তি

   - মাথায় আঘাত

   - সংক্রামক রোগ

   - টিউমার


কখন চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে:


নিম্নলিখিত লক্ষণগুলি দেখা দিলে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত:


১. নিয়মিত মাথাব্যথা অনুভব করা

২. দৃষ্টিশক্তিতে পরিবর্তন আসা

৩. দ্বিধাগ্রস্ততা বাড়া

৪. জ্বর

৫. ঘাড় আটকে যাওয়া

৬. শারীরিক দুর্বলতা বৃদ্ধি পাওয়া


প্রতিরোধ ও সতর্কতা:


১. নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করান।

২. সুষম খাদ্যাভ্যাস ও পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করুন।

৩. মানসিক চাপ কমানোর চেষ্টা করুন।

৪. নিয়মিত ব্যায়াম করুন।

৫. ওষুধ সেবনের ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।


মাথার একপাশে ব্যথা যদিও প্রায়শই সাধারণ সমস্যা, তবে এর পুনরাবৃত্তি বা অন্যান্য উপসর্গের সাথে দেখা দিলে তা অবহেলা করা উচিত নয়। প্রয়োজনে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে সঠিক নির্ণয় ও চিকিৎসা নিশ্চিত করা গুরুত্বপূর্ণ।

Post a Comment