বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে জেনে নিন লক্ষণ, প্রাথমিক চিকিৎসা ও সতর্কতা
হঠাৎ বুকে ব্যথা অনুভব করা একটি সাধারণ সমস্যা, যা অনেকেই অভিজ্ঞতা করেন। কিন্তু এই ব্যথা হৃদরোগের লক্ষণ নাকি সাধারণ গ্যাসের সমস্যা, তা নির্ধারণ করা গুরুত্বপূর্ণ। চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা এই দুই ধরনের ব্যথার মধ্যে পার্থক্য নির্ণয় ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন।
হৃদরোগের লক্ষণ:
১. বুকের মাঝখানে চাপ বা কিছু চেপে থাকার অনুভূতি
২. শারীরিক পরিশ্রমে ব্যথা বৃদ্ধি
৩. ব্যথা চোয়াল, ঘাড় বা পিঠে ছড়িয়ে যাওয়া
৪. অত্যধিক ঘাম
৫. শ্বাসকষ্ট
৬. মুখের রঙ ফ্যাকাশে বা কালচে হওয়া
৭. হাত-পা ক্রমশ ঠান্ডা হয়ে যাওয়া
৮. ব্যথা ২০-২৫ মিনিট স্থায়ী হওয়া
জরুরি করণীয়:
১. অবিলম্বে চারটি ডিসপ্রিন ট্যাবলেট খান
২. জিভের নিচে নাইট্রেট স্প্রে বা ট্যাবলেট ব্যবহার করুন
৩. দ্রুত হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ হাসপাতালে যান
বিশেষ সতর্কতা:
ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে হৃদরোগের ব্যথা অনুভব করা কঠিন হতে পারে। এছাড়া, অনেক সময় সাধারণ মানুষও হৃদরোগের ব্যথাকে গ্যাসের ব্যথার সাথে গুলিয়ে ফেলেন। মনে রাখবেন, ২০% ক্ষেত্রে এই ধরনের ব্যথা হৃদরোগের কারণে হতে পারে।
চিকিৎসা পদ্ধতি:
১. প্রাইমারি এনজিওপ্লাস্টি: রক্তনালীতে ব্লক থাকলে বেলুন দিয়ে খোলা ও স্টেন্ট বসানো
২. বাইপাস সার্জারি: তিনটি প্রধান ধমনী ক্ষতিগ্রস্ত হলে এবং হৃদযন্ত্রের কার্যক্ষমতা কমে গেলে
প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা:
১. নিয়মিত ব্যায়াম, বিশেষত দৈনিক ৪ কিলোমিটার হাঁটা
২. ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা
৩. কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার সীমিত করা
৪. দৈনিক তেলের ব্যবহার ১৫-২০ মিলিলিটারে সীমিত রাখা
বিশেষজ্ঞরা জোর দিয়েছেন, বুকে ব্যথা অনুভব করলে তা হালকাভাবে নেওয়া উচিত নয়। প্রয়োজনে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানো জরুরি। পাশাপাশি, সুস্থ জীবনযাপন ও নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে।
Post a Comment