চায়ের সঙ্গে অতিরিক্ত বিস্কুট খাচ্ছেন না তো?? স্বাস্থ্যের জন্য অদৃশ্য হুমকি

গবেষণায় উঠে এলো বিস্কুটের অপরিমিত সেবনের বিপদ - ডায়াবেটিস থেকে ক্যান্সার পর্যন্ত ঝুঁকি



চায়ের সঙ্গে বিস্কুট খাওয়া বাঙালি সংস্কৃতির একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। কিন্তু এই নিরীহ মনে হওয়া অভ্যাসটি যে গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যার কারণ হতে পারে, তা অনেকেই জানেন না। সাম্প্রতিক গবেষণায় উঠে এসেছে বিস্কুটের অতিরিক্ত ব্যবহারের নানাবিধ ক্ষতিকর দিক।


সকাল-বিকাল চায়ের সঙ্গে দু-চারটে বিস্কুট খাওয়া অনেকেরই অভ্যাস। শুধু প্রাপ্তবয়স্করাই নয়, শিশুদের স্কুলের টিফিনেও বিস্কুট দেওয়া হয় নিয়মিত। এর সহজলভ্যতা ও স্বাদের কারণে বিস্কুট হয়ে উঠেছে একটি জনপ্রিয় স্ন্যাকস।


স্বাস্থ্যের উপর নেতিবাচক প্রভাব

১. ডায়াবেটিসের ঝুঁকি: বিস্কুটে উচ্চ পরিমাণে শর্করা থাকায় রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা হঠাৎ বেড়ে যেতে পারে, যা ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়।


২. হৃদরোগের সম্ভাবনা: বিস্কুটে ট্রান্স ফ্যাটের উপস্থিতি রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়।


৩. ক্যান্সারের আশঙ্কা: দীর্ঘমেয়াদি গবেষণায় দেখা গেছে, অতিরিক্ত বিস্কুট সেবন এন্ডোমেট্রিয়াল ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।


৪. পাচনতন্ত্রের সমস্যা: বিস্কুটে ফাইবারের অভাব কোষ্ঠকাঠিন্যসহ নানা পাচনতন্ত্রের সমস্যার কারণ হতে পারে।


৫. অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধি: নিয়মিত বিস্কুট সেবন ক্রমাগত ওজন বাড়ার কারণ হতে পারে।


৬. শিশুদের ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা: শিশুদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত বিস্কুট সেবন অ্যালার্জি এবং পুষ্টিগত সমস্যার কারণ হতে পারে।


বৈজ্ঞানिক গবেষণার ফলাফল :


'ক্যান্সার এপিডেমিওলজি, বায়োমার্কারস অ্যান্ড প্রিভেনশন' নামক একটি মার্কিন গবেষণা পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিস্কুটের অতিরিক্ত ব্যবহার নানা স্বাস্থ্য সমস্যার কারণ হতে পারে। সুইডেনে ৬০,০০০ এরও বেশি মহিলার উপর ১০ বছর ধরে চালানো একটি গবেষণায় দেখা গেছে, যাঁরা নিয়মিত অতিরিক্ত বিস্কুট খেয়েছেন, তাঁদের মধ্যে পাচনতন্ত্রের সমস্যা বেশি দেখা গেছে।


বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ


১. পরিমিত সেবন: বিস্কুট সম্পূর্ণ বর্জন না করে পরিমিত পরিমাণে খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।


২. বিকল্প খাবার: চায়ের সঙ্গে বিস্কুটের পরিবর্তে স্বাস্থ্যকর বিকল্প যেমন ফল বা বাদাম খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।


৩. শিশুদের ক্ষেত্রে সতর্কতা: শিশুদের ক্ষেত্রে বিস্কুটের ব্যবহার কমিয়ে পুষ্টিকর খাবার দেওয়ার উপর জোর দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।


বিস্কুট যে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ তা নয়, তবে এর অতিরিক্ত ব্যবহার যে স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে, সে বিষয়ে সচেতন হওয়া প্রয়োজন। পরিমিত ব্যবহার এবং স্বাস্থ্যকর বিকল্প বেছে নেওয়ার মাধ্যমে আমরা এই ঝুঁকি কমাতে পারি। স্বাস্থ্যসচেতন হয়ে খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করা সময়ের দাবি।

Post a Comment