কাশ্মিরে অস্বাভাবিক তাপদাহ: জনজীবন বিপর্যস্ত

২৫ বছরের রেকর্ড ভেঙে তাপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, কৃষি ও শিক্ষাক্ষেত্রে ব্যাপক প্রভাব



ভূস্বর্গ খ্যাত জম্মু-কাশ্মির এখন প্রচণ্ড তাপদাহে পুড়ছে। বৈশ্বিক উষ্ণায়নের প্রভাবে এই অঞ্চলের তাপমাত্রা গত ২৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছেছে। এই অস্বাভাবিক গরমে কাশ্মিরের জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।

সাধারণত গ্রীষ্মকালেও কাশ্মিরের তাপমাত্রা ৩০ ডিগ্রির বেশি ওঠে না। কিন্তু এবারের তাপদাহ অভূতপূর্ব। এতে কৃষি, শিক্ষা ও দৈনন্দিন জীবনযাত্রা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

উদ্যানপালন বিভাগ আপেল ও আখরোট চাষিদের জরুরি সতর্কতা জারি করেছে। তারা বাগানে অবিলম্বে জলসেচ ও গাছের গোড়ায় আর্দ্রতা বজায় রাখার নির্দেশ দিয়েছে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মার্চ-এপ্রিল থেকে বৃষ্টির অভাব চলছে। এতে আপেল ও অন্যান্য ফলের উৎপাদন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

তাপদাহের কারণে ঝিলম নদীর জলস্তর হ্রাস পেয়েছে। ধান ও সবজির ক্ষেত শুকিয়ে যাচ্ছে। আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, আগামী দিনে সামান্য বৃষ্টি হতে পারে, তবে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই।

শিক্ষাক্ষেত্রেও প্রভাব পড়েছে। সরকার পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত দু'দিনের জন্য স্কুল বন্ধ ঘোষণা করেছে। অন্যান্য ক্লাসের সময়সূচি সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছে।

স্থানীয় কর্তৃপক্ষ শিশু ও বয়স্কদের দুপুরের রোদে বাইরে না বেরোনোর পরামর্শ দিয়েছে। জরুরি প্রয়োজনে ছাতা ব্যবহার ও প্রচুর পানি পানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

শ্রীনগর আবহাওয়া দপ্তরের প্রধান সোনাম লোটাস জানিয়েছেন, দীর্ঘ সময় বৃষ্টি না হওয়ার কারণে এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। তিনি আরও কয়েকদিন এই অবস্থা চলার পূর্বাভাস দিয়েছেন।

শের-ই-কাশ্মির বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষিবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক তাসনিম মুবারক মনে করেন, এই তাপদাহ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব স্পষ্টভাবে তুলে ধরছে। তিনি আপেলের আকার ও রঙের ওপর এর নেতিবাচক প্রভাবের আশঙ্কা করেছেন।

কাশ্মিরবাসী এখন বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা করছেন। জলবায়ু পরিবর্তনের এই ভয়াবহ প্রভাব মোকাবেলায় দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছে এই ঘটনা।

Post a Comment