বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ: প্রযুক্তি চিকিৎসার সহায়ক, কিন্তু চিকিৎসকের বিকল্প নয়
আজকাল শরীর খারাপ হলেই অনেকেই প্রথমে ইন্টারনেটে গিয়ে ওষুধ বা চিকিৎসার উপায় খোঁজার চেষ্টা করেন। কিন্তু এভাবে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই নিজে নিজে ওষুধ খাওয়া কতটা নিরাপদ? এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
প্রযুক্তির উন্নতির সাথে সাথে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ইন্টারনেটের ব্যবহার বেড়েছে। বিশেষ করে স্বাস্থ্য সম্পর্কিত তথ্য জানতে অনেকেই এখন নির্ভর করেন গুগলের ওপর। কিন্তু এর ফলে বিপদ বাড়ছে বলেই মনে করছেন চিকিৎসকরা।
উদাহরণ হিসেবে, মাথা ব্যথার ওষুধ বা জেল খুঁজলে গুগল'র আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে থাকে। কিন্তু ওই ওষুধ আপনার পক্ষে ভালো কিনা তা না বুঝেই সেভাবে চিকিৎসা নেওয়ায় পরে আরও বেশি সমস্যায় পড়তে হতে পারে।
ইদানীং অনলাইনে ওষুধ বা ডায়েট চার্ট দেখে অনেকেই নিজেদের অসুখ বাড়িয়ে তুলেছেন এবং চিকিৎসকের কাছে দেরিতে গিয়ে সমস্যা আরও জটিল হয়েছে। তাই শুধুমাত্র অনলাইনের তথ্যকে বিশ্বাস না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই ভালো বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
তারা জানান, প্রতিটি মানুষের শরীর ভিন্ন রকম এবং সে জন্য একই ধরনের উপসর্গে সবার চিকিৎসাও এক রকম হয় না। শুধু বই বা গবেষণাপত্র দেখে নয়, রোগীকে সরাসরি দেখে তার রোগের ধরন ও উপসর্গ বিশ্লেষণ করে তবেই চিকিৎসক সঠিক চিকিৎসা দিতে পারেন।
মানসিক সমস্যার ক্ষেত্রেও মানুষের ইন্টারনেট নির্ভরতা বেড়েছে, বিশেষ করে করোনা লকডাউনের সময়। গুগলে ভালো থাকার টিপস পাওয়া গেলেও জটিল মানসিক রোগের চিকিৎসা করার ক্ষমতা অনলাইন টুলের নেই বলেই মনে করেন মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা। কারণ এক্ষেত্রে রোগীর আচরণ ও মানসিকতা বোঝা জরুরি, যেটা শুধু অভিজ্ঞ চিকিৎসকই পারবেন।
যদিও চিকিৎসা ক্ষেত্রে প্রযুক্তি ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার দ্রুত বাড়ছে, তবুও চিকিৎসকের ভূমিকা অপরিহার্য বলেই মনে করা হচ্ছে। কারণ প্রযুক্তি চিকিৎসার সহযোগী হতে পারলেও মানুষের মত চিকিৎসক হতে পারবে না। তাই রোগের লক্ষণ দেখে অনলাইনে চিকিৎসা খোঁজার আগে অবশ্যই যোগ্য চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াটাই নিরাপদ পথ।
Post a Comment